FAQ

সাধারণ জিজ্ঞাসা ও প্রশ্নোত্তর


০১. প্রশ্ন: গত ১ মাস হলো আমি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাতারে এসেছি কিন্তু এখনো আমার কোম্পানি খুঁজে পাচ্ছি না। এখন আমি কিভাবে কোম্পানি খুঁজে পাবো?


  • কোম্পানি খুঁজে পাওয়ার জন্য আপনার ভিসা ও পাসপোর্ট কপি নিয়ে লেবার রিলেশন ডিপার্টমেন্টে (সানাইয়া-১৩ নং অথবা সিটি সেন্টারের বিপরীতে আল হুদা টাওয়ারের ১ম তলায়) অথবা নিকটস্থ পুলিশ স্টেশনে গিয়ে যোগাযোগ করুন।
  • এছাড়াও সিইআইডি (সার্চ এন্ড ফলোআপ ডিপার্টমেন্ট) বা পাবলিক প্রসিকিউশনের রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্সে যোগাযোগ করে আপনার নিয়োগদাতা বা কোম্পানির মোবাইল নং সংগ্রহ করে যোগাযোগ করুন।
  • প্রয়োজনে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের সহযোগিতা গ্রহণ করুন।

০২. প্রশ্ন: আমি ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় কাতারে এসেছি। কিন্তু কোম্পানি আমার নামে কাতারি আইডি ইস্যু করেনি। আমি কিভাবে কাতারি আইডি পেতে পারি?

  • কাতারি আইডি ইস্যুর জন্যে নিয়োগদাতা বা কোম্পানির যথাযথ কর্তৃপক্ষ যথা মানদুব (পিআরও), মুদির (ম্যানেজার) বা এইচআরকে  অনুরোধ করুন।
  • কাতারি আইডি ইস্যু না করলে ভিসা ও পাসপোর্ট নিয়ে কাতারের সিইআইডি অফিসের ভিতরে অবস্থিত পাবলিক প্রসিকিউশনের রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্সে গিয়ে কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করুন।

০৩. প্রশ্ন: আমি কাতারে একটি কোম্পানিতে চাকুরি করছি। আমার চাকুরির ১ম বছর ভালই চলছিল। বর্তমানে আমাকে ৪/৫ মাস যাবত বেতন দিচ্ছে না। কাতারি আইডিও নবায়ন করছে না। এমতাবস্থায় আমি কিভাবে কাতারি আইডি (নবায়ন) পেতে পারি?

  • বকেয়া বেতন-ভাতা পাওয়ার জন্য লেবার রিলেশন ডিপার্টমেন্টে (সানাইয়া-১৩ নং অথবা সিটি সেন্টারের বিপরীতে আল হুদা টাওয়ারের ১ম তলায়) গিয়ে অভিযোগ করুন।
  • অথবা অনলাইনে (LBR-Complaints@ADLSA.gov.qa) ই-মেইলে আপনার অভিযোগটি দাখিল করতে পারেন।
  • অভিযোগ নিষ্পত্তিতে বিলম্ব হলে দাফনায় অবস্থিত প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের শ্রম সম্পর্ক বিভাগে গিয়ে আপনার বিষয়টি তুলে ধরুন।
  • এরপরও যদি আপনার সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে পাবলিক প্রসিকিউশন এর রেসিডেন্সি অ্যাফেয়ার্সে অভিযোগ দাখিল করুন।
  • প্রয়োজনে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের সহযোগিতা গ্রহণ করুন।


০৪. প্রশ্ন: আমি কাতারের একটি কোম্পানিতে সুনামের সাথে কাজ করছি। কিন্তু দু:খের বিষয় হলো আমার কাতার আইডিটি হারিয়ে গেছে। বর্তমানে আমি কিভাবে পুনরায় কাতার আইডি ফিরে পেতে পারি?

  • কোম্পানির মানদুব (পিআরও), মুদির (ম্যানেজার) অথবা এইচআরকে বিষয়টি দ্রুত অবহিত করে মেতরাশের মাধ্যমে কাতার আইডির রিপ্লেসমেন্ট প্রাপ্তির জন্য আবেদন করতে অনুরোধ করুন।
  • কোম্পানির সহযোগিতা না পেলে মূল পাসপোর্ট ও কাতার আইডির ফটোকপি নিয়ে জাওয়াযাতের (ইমিগ্রেশন) যে কোন সার্ভিস সেন্টারে যোগাযোগ করুন।

০৫. প্রশ্ন: আমার লেবার কন্ট্রাক্ট বা শ্রমচুক্তির মেয়াদ ছিল ২ বছর ইতোমধ্যে যার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এখন আমি কিভাবে সহজ পদ্ধতিতে নিয়োগদাতা পরিবর্তন করতে পারবো?

  • নতুন নিয়োগদাতা বা কোম্পানি খুঁজে বের করুন এবং বর্তমান কোম্পানির কাছে রিজাইন লেটার (ইস্তফাপত্র) জমা করুন।
  • ইস্তফাপত্র, নতুন কোম্পানির অফার লেটার, নিয়োগদাতা পরিবর্তনের নির্ধারিত ফরম পূরণ ও যথাস্থানে সীল-স্বাক্ষরসহ কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে (http://e-notice.adlsa.gov.qa/Login)  আবেদন করুন।
  •  চুক্তিপত্রের মেয়াদ আন-লিমিটেড হলে বা চুক্তিপত্রে তারিখ উল্লেখ না থাকলে, চাকরি শুরুর পাঁচ বছর পর কোম্পানি/ নিয়োগদাতার অনুমতি ছাড়া নিয়োগদাতা পরিবর্তনের আবেদন করতে পারবেন।
  •  তবে নিয়োগদাতার অনুমতি সাপেক্ষে বা ক্লিয়ারেন্স নিয়ে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বা চাকরির মেয়াদ ১ বছর হওয়ার পর যেকোনো সময় আবেদন করতে পারবেন।

০৬. প্রশ্ন: আমি চাকরির চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেছি, কিন্তু কোম্পানি আমাকে চুক্তিপত্রের হার্ডকপি দেয়নি এখন আমি চুক্তিপত্রটি কিভাবে অনলাইন থেকে সংগ্রহ করবো?

  • অনলাইন থেকে শ্রমচুক্তি প্রাপ্তির জন্য প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিম্নোক্ত ওয়েব লিংকে (http://empcont.adlsa.gov.qa) প্রবেশ করুন।
  • আপনার কাতারি আইডি বা ভিসা নং এবং রেজিস্টার্ড মোবাইল নং দিয়ে লগইন করুন।
  • লগইন করার পর আপনার মোবাইলে একটি পাসওয়ার্ড (OTP) আসবে। নির্ধারিত স্থানে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করলে আপনার চুক্তিপত্র ও নিয়োগদাতার অন্যান্য তথ্যাদি পাবেন।
  • বিশেষ দ্রষ্টব্য: নিয়োগদাতা বা কোম্পানির মানদুব (পিআরও), মুদির (ম্যানেজার) বা এইচআর এর কাছ থেকে আপনার চুক্তিপত্রের হার্ডকপি অবশ্যই পূর্ব থেকে সংগ্রহ করবেন। কেননা অনেক সময় চুক্তিপত্র অনলাইনে পাওয়া যায় না।

০৭. প্রশ্ন: আমি একটি কোম্পানিতে গত ৫ বছর ধরে চাকরি করছি। অনেক বার আবেদন করার পরও কর্তৃপক্ষ আমার বেতন বৃদ্ধি করছে না। এখন আমি কোম্পানি পরিবর্তন করতে চাই অথচ আমার কোম্পানি এনওসি দিতে রাজি হচ্ছে না। এমতাবস্থায় আমি কিভাবে কোম্পানি পরিবর্তন করতে পারি?

  • বর্তমান নিয়মানুযায়ী কোনো নিয়োগদাতার নিকট ২ বছরের অধিক কাজ করলে নিয়োগদাতা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ২ মাস পূর্বে বর্তমান নিয়োগদাতাকে ইস্তফাপত্র (রিজাইন লেটার) দিতে হবে।
  •  গৃহীত ইস্তফাপত্র, নতুন কোম্পানির অফার লেটার, নিয়োগদাতা পরিবর্তনের নির্ধারিত ফরম পূরণ ও যথাস্থানে সীল-সাক্ষরসহ কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (http://e-notice.adlsa.gov.qa/Login) ব্যবহার করতে হবে।
  •  উক্ত সাইট ওপেন করলে লগইন করার জন্যে বলা হবে। আপনি নির্ধারিত স্থানে আপনার কাতার আইডি নং ও রেজিস্টার্ড মোবইল নং দিয়ে লগইন করতে চাইলে আপনার মোবাইলে একটি পাসওয়ার্ড (OTP) আসবে। নির্ধারিত স্থানে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।
  • এবার নিয়োগদাতা পরিবর্তনের চাহিত ডকুমেন্টগুলো আপলোড করে আবেদনটি সাবমিট করুন এবং মোবাইলে প্রাপ্ত মেসেজটি সংরক্ষন করুন।
  • উল্লেখ্য যে, সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী ২ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে নিয়োগদাতা পরিবর্তন করতে চাইলে ১ মাস পূর্বে নিয়োগদাতার নিকট ইস্তফাপত্র (রিজাইন লেটার) প্রদান করতে হবে।


০৮. প্রশ্ন: আমি কর্মরত থাকাবস্থায় হঠাৎ শুনলাম আমার কোম্পানি আমাকে রানওয়ে কেস বা বালাগ হুরুব মামলা দিয়েছে। বর্তমানে এ বিষয়টি নিয়ে আমি অনেক চিন্তায় আছি। সঠিক পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবেন।

  • আপনি বিলম্ব না করে সিইআইডির ভিতরস্থ নিয়াবাহ কোর্টে গিয়ে সরাসরি অভিযোগ দায়ের করুন। সেখান থেকে আপনাকে তাযাল্লুম মিন বালাগ তারকিল আমাল নামে একটি ফরম দেয়া হবে।
  • ফরমটি টাইপ করে পূরণপূর্বক এর সাথে আপনার আইডি ও অন্যান্য ডকুমেন্ট যেমন টাইমশীট, এগ্রিমেন্ট সংযুক্ত করে উক্ত কোর্টে জমা দিন।
  •  আপনাকে কোর্টে হাজির হওয়ার জন্যে তাৎক্ষনিক বা মোবাইলে পরবর্তীতে তারিখ জানানো হবে। উক্ত তারিখে যথাসময়ে উপস্থিত থাকবেন। আশাকরি আপনি নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।
  •  বিশেষ দ্রষ্টব্য: আপনার বিরূদ্ধে প্রদেয় রানওয়ে কেস বা বালাগ হুরুব জানার পরও যদি আপনি ২ মাসের বেশি কালক্ষেপন করেন অথবা প্রকৃতার্থে নিয়োগদাতা থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে যান, তাহলে আপনাকে পাবলিক প্রসিকিউশন বা আদালত দেশে যেতে বাধ্য করবে এবং ১২,০০০ রিয়াল জরিমানা অনাদায়ে ৫ বছরের জন্য কাতারে আপনাকে প্রয়োজনে নিষিদ্ধ করবে। তবে আপনার রানওয়ে কেসের মেয়াদ যদি ১ মাসের কম হয়, তাহলে কোনো জরিমানা না দিয়ে আপনি পুনরায় কাতারে আসতে পারবেন।
  •  বিস্তারিত জানার জন্যে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের সহযোগিতা গ্রহণ করতে পারবেন।


০৯. প্রশ্ন: আমি একজন নারী গৃহকর্মী ভিসায় চাকুরি নিয়ে গত ৪ মাস পূর্বে কাতারে আসি। আমার নিয়োগদাতা আমাকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করে। তাই আমি নিয়োগদাতা পরিবর্তন অথবা বাংলাদেশে ফিরে যেতে চাই। আমাকে পরামর্শ দিন যে আমি কিভাবে সহজে দেশে ফিরে যেতে পারবো?

  • নির্যাতনের স্বীকার হওয়া মাত্র কাতারের ইমার্জেন্সি হটলাইন নং ৯৯৯ এ যোগাযোগ করে পুলিশকে আপনার বিষয়ে বলুন।
  • নিয়োগদাতা পরিবর্তন ও অন্যান্য দাবি-দাওয়া আদায়ের জন্যে প্রশাসনিক উন্নয়ন, শ্রম ও সামাজিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের রিক্রুটমেন্ট ডিপার্টমেন্টের হেড অব লেবার অফিসেস সেকশন বরাবর (অফিসটি দাফনাহ এলাকায় অবস্থিত সিটি সেন্টারের বিপরীতে আল হুদা টাওয়ারের ২৬ তলায়) অভিযোগ দায়ের করুন।
  • সিইআইডির ভিতরে অবস্থিত সার্চ এন্ড ফলোআপ ডিপার্টমেন্টে যোগাযোগ করলেও , তারা আপনাকে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
  • প্রয়োজনে আপনার পাসপোর্ট/ভিসা কপিসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের সহযোগিতা নিতে পারেন।

১০. প্রশ্ন: আমার কাতার আইডির মেয়াদ শেষ, কিন্তু কোম্পানি ব্লক থাকায় আমার কাতার আইডি নবায়ন করা যাচ্ছে না। এখন আমি কিভাবে কাতারে বৈধতাসহ কাজ করতে পারবো?

  • আপনি একটা ভাল কোম্পানি খুঁজে এপোয়েন্টমেন্ট লেটার সংগ্রহ করুন।
  • নতুন কোম্পানির অফার লেটার, নিয়োগদাতা পরিবর্তনের নির্ধারিত ফরম পূরণ ও যথাস্থানে সীল-সাক্ষরসহ কাতারের শ্রম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট (http://e-notice.adlsa.gov.qa/Login) এড্রেসে গিয়ে নিয়োগদাতা পরিবর্তনের জন্যে আবেদন করুন।
  • কোম্পানির তথ্যসহ কাতারের ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস অফিসে গিয়ে কোম্পানির বিরূদ্ধে অভিযোগ করে নিয়োগদাতা পরিবর্তনে সহযোগিতা চাইতে পারেন।
  • প্রয়োজনে আপনার পাসপোর্ট/ভিসা কপিসহ বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ের সহযোগিতা নিতে পারেন।

১১. প্রশ্ন: আমি গত ৬ বছর ধরে কাতারে আছি। প্রথম ২ বছর বৈধভাবে কাজ করার পর কোম্পানি থেকে পালিয়ে বাইরে কাজ করছি। বতর্মানে আমাকে দেশে যাওয়া খুবই প্রয়োজন। আমি পুনরায় কাতারে কিভাবে আসতে পারবো?

  • আপনি বৈধ পাসপোর্ট নিয়ে কাতারের সিইআইডি’র ভিতরে অবস্থিত সার্চ এন্ড ফলোআপ ডিপার্টমেন্টের ‘মুসাল্লামি আনফুসাহুম’ সারেন্ডার সেকশনে গিয়ে নিজেকে আত্মসমর্পন পূর্বক দেশে যাওয়ার জন্য আবেদন করুন।
  • পুনরায় কাতারে ফিরে আসার জন্য সিইআইডি’র কর্মকর্তার কাছে আবেদন করুন। কতদিন পরে কাতারে ফিরে আসতে পারবেন এব্যাপারে তিনি আপনাকে অবহিত করবেন।
  •  উল্লেখ্য যে, আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ না থাকলে দূতাবাসে আবেদনের মাধ্যমে পাসপোর্টের মেয়াদ বাড়িয়ে নিতে পারবেন। আর পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে থানায় জিডি করে তার কপিসহ টিপি (ট্যাভেল পারমিট) প্রাপ্তির জন্য দূতাবাসে আবেদন করতে হবে।

১২. প্রশ্ন: কাতারে ভিসা ক্রয় বিক্রয়/ ফ্রি ভিসায় কাজ করা কি বৈধ নাকি অবৈধ?

  • কাতারে ভিসা ক্রয়-বিক্রয়/ ফ্রি ভিসায় কাজ করা উভয়ই অবৈধ এবং আইনত দন্ডনীয়।
  •   কাতারের আইন অনুযায়ী এ কাজে জড়িত ব্যক্তির ৩ বছরের জেল এবং ৫০ হাজার কাতারি রিয়াল জরিমানার বিধান রয়েছে।
  •   ফ্রি ভিসাধারী অন্যত্র কাজ করার পর কোম্পানি বেতন-ভাতা ঠিকমতো পরিশোধ না করলেও আইনি সহায়তা নেয়ার কোনো সুযোগ থাকে না।

১৩. প্রশ্ন: আমি একজন বাংলাদেশি নাগরিক। আরেকজন বাংলাদেশিকে বিয়ে করতে চাই। উভয়ই কাতারেই আছি। কিভাবে বিবাহকার্য সম্পাদন করতে পারি?

  • বাংলাদেশ দূতাবাস, দোহা, কাতারে বিবাহ ও তালাক কার্যক্রম পরিচালিত হয় না।
  •  আপনি কাতারের আল সাদ এলাকায় অবস্থিত কাতারের ফ্যামেলি কোর্টে গিয়ে যোগযোগ করুন।
  •  উল্লেখ্য যে,  কাতারে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চাইলে পাত্রের স্ট্যান্ডার্ড সেলারি, প্রফেশন, শিক্ষাগত যোগ্যতা,  পাত্র-পাত্রীর অভিভাবকের উপস্থিতি প্রভৃতি বাধ্যতামূলক।


১৪. প্রশ্ন: কাতারে কোন বাংলাদেশি মারা গেলে তার লাশ কিভাবে দেশে পাঠাবো?

  •  হামাদ হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর নোটিফিকেশন অব ডেথ, ডেথ সার্টিফিকেট, হাসপাতালের ভিতরে অবস্থিত Human Services Office থেকে  লাশ দেশে প্রেরণের এনওসি পেপার, কোম্পানির যাবতীয় ডকুমেন্টস (কম্পিউটার কার্ডের কপি, পিও বক্স নং, টেলিফোন নং ঠিকানা ইত্যাদি), ফাইনাল সেটেলমেন্ট পেপার,  মৃতের পাসপোর্টের মূল কপি এবং কাতারি আইডির কপি সংগ্রহ করতে হবে।
  • মৃতের বৈধ ওয়ারিশগণের জাতীয় পরিচয়পত্র, যোগাযোগ নম্বর এবং বাংলাদেশস্থ এয়ারপোর্ট হতে লাশ গ্রহণকারি ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র/ পাসপোর্ট কপিসহ যোগাযোগ নম্বর সংগ্রহ করতে হবে।
  • অন্য হাসপাতালে মারা গেলে উক্ত হাসপাতাল থেকে নোটিফিকেশন অব ডেথ পেপার সংগ্রহ করে হামাদ হাসপাতাল থেকে মৃত্যুর সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হবে।
  • হাসপাতালের বাইরে অথবা দুর্ঘটনায় মারা গেলে প্রথমেই ৯৯৯ নং ফোন দিয়ে পুলিশকে জানাতে হবে এবং পুলিশ রিপোর্ট সংগ্রহ করতে হবে।
  •  উপর্যুক্ত ডকুমেন্টসমূহ নিয়ে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ে জমা প্রদানপূর্বক দূতাবাস হতে এনওসি সংগ্রহ করতে হবে।
  • দূতাবাস হতে ইস্যুকৃত এনওসি নিয়ে হামাদ হাসপাতালের মর্গে যোগাযোগ করলে তারা লাশ দেশে পাঠানোর প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে।

১৫. প্রশ্ন: কাতারে মৃত প্রবাসীকে স্থানীয়ভাবে দাফন করার নিয়ম কি? 

  • হাসপাতাল থেকে ইস্যুকৃত মৃত্যুর নোটিফিকেশন অব ডেথ, ডেথ সার্টিফিকেট, হাসপাতালের ভিতরে অবস্থিত পবিলিক হেল্থ ডিপার্টমেন্ট থেকে স্থানীয়ভাবে লাশ দাফনের এনওসি পেপার, কোম্পানির যাবতীয় ডকুমেন্টস (কম্পিউটার কার্ডের কপি, পিও বক্স নং, টেলিফোন নং ঠিকানা ইত্যাদি), পুলিশ রিপোর্ট (দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে), ফাইনাল সেটেলমেন্ট পেপার,  মৃতের পাসপোর্টের মূল কপি এবং কাতারি আইডির কপি, ওয়ারিশগণের জাতীয় পরিচয়পত্র, ওয়ারিশ সনদ ও যোগাযোগ নম্বর সংগ্রহ করতে হবে এবং ওয়ারিশগণ হতে স্থানীয়ভাবে লাশ দাফনের জন্যে অনাপত্তিপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
  • উপর্যুক্ত ডকুমেন্টসমূহ নিয়ে দূতাবাসের শ্রম কল্যাণ উইংয়ে জমা প্রদানপূর্বক লাশ স্থানীয়ভাবে দাফনের জন্যে এনওসি সংগ্রহ করতে হবে। দূতাবাস কর্তৃক এনওসি নিয়ে হাসপাতালের মর্গে জমা দিলে তারা স্থানীয়ভাবে লাশ দাফনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

১৬. প্রশ্ন: কাতারে মৃত প্রবাসীর ওয়ারিশগণ বাংলাদেশে কি কি সুবিধা পেয়ে থাকেন?

  • লাশ দাফন বাবদ বিমান বন্দরের ভিতরে অবস্থিত প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক হতে লাশ গ্রহণকারীকে ৩৫ হাজার টাকার চেক বুঝিয়ে দেয়া হয়।
  • মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ বাবদ পরিবারকে ৩ লক্ষ টাকা সরকারি খাত হতে প্রদান করা হয়। উক্ত অর্থ প্রাপ্তির জন্য চেয়ারম্যানকর্তৃক ক্ষমতার্পন পত্র নিয়ে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি ব্যুরো অফিসে যোগাযোগ করতে হবে।

১৭. প্রশ্ন: কাতারে দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ব্যক্তির ক্ষতিপূরণ কিভাবে পাওয়া যায়?

  • দুর্ঘটনায় মৃত্যুজনিত ক্ষতিপূরণ প্রাপ্তির লক্ষ্যে মৃতের ওয়ারিশকর্তৃক প্রদত্ত পাওয়ার অব অ্যাটর্নি প্রস্তুতপূর্বক বাংলাদেশস্থ আইন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক যথাযথভাবে সত্যায়ন করে বাংলাদেশ দূতাবাস, কাতারে প্রেরণ করতে হবে। দূতাবাস কর্তৃক সত্যায়িত কপি কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সত্যায়ন করে তার একটি কপি কাতারস্থ পাবলিক প্রসিকিউশনে জমা করতে হবে।
  • প্রয়োজনে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি ব্যুরো অফিস অথবা কাতারস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে যোগাযোগ করতে পারেন।

১৮. প্রশ্ন: ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্যপদ পাওয়ার উপায় কি? 

  •  ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্যপদ পেতে এই লিংকে (www.wewb.gov.bd) প্রবেশ করুন এবং সদস্যপদ নিবন্ধনে ক্লিক পূর্বক আবেদন ফরম পুরণ করে সাবমিট করুন।
  •  আবেদন সাবমিট করার পর অনলাইন জেনারেটেড আবেদনের কপি, পাসপোর্ট এবং কাতারি আইডির কপি নিয়ে দূতাবাসের কাউন্টারে ১৭০ রিয়াল জমা দিয়ে সহজেই সদস্যপদ গ্রহণ করতে পারেন।
  •  অনুর্ধ্ব ৫৯ বছরের সকল প্রবাসীগণ ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্যপদ গ্রহণ করতে পারেন।
  •  উল্লেখ্য যে, যারা বিএমইটি হতে যথাযথ প্রক্রিয়ায় ম্যানপাওয়ার ক্লিয়ারেন্স কার্ড সংগ্রহ করে প্রবাসে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য নতুন করে সদস্যপদের জন্যে আবেদন করতে হবে না। তারা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ওয়েজ আর্নার্স বোর্ডের সদস্য হিসেবে বিবেচিত হবেন।

১৯ প্রশ্ন: ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সদস্যপদের সুযোগ-সুবিধা কি কি?

  •   যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির ক্ষেত্রে প্রবাসীর সন্তান হিসেবে ০.৫০ শতাংশ কোটার ভিত্তিতে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
  •  দুর্ঘটনায় আহত প্রবাসী কর্মীগণ কর্তৃক দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে আর্থিক সাহায্য প্রাপ্তির সুযোগ রয়েছে।
  •  প্রবাসে মৃত কর্মীদের লাশ দাফনের জন্যে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক হতে তাৎক্ষণিকভাবে ৩৫ হাজার টাকার আর্থিক সাহায্য পাওয়ার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া মৃতের ওয়ারিশদের অনুকূলে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড হতে আরো ৩ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য প্রদান করা হয়ে থাকে।
  •   প্রবাসীদের জন্য সহজ শর্তে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক হতে স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান করা হয়।
  •   এছাড়া প্রবাসীদের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ঘোষিত বিভিন্ন ধরণের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির সম্ভাবনা রয়েছে।

২০. প্রশ্ন: ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ডের সুবিধা কি?

  •  সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ওয়েজ আর্নার্স ডেভেলপমেন্ট বন্ড পাঁচ বছর মেয়াদী।
  •   ২৫ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়।
  •   মেয়াদ শেষে মুনাফা পাওয়া যায় ১২ শতাংশ। প্রতি ছয় মাস অন্তর লভ্যাংশ তোলার সুযোগ রয়েছে। কেউ যদি ছয় মাসে লভ্যাংশ না তোলে, তবে মেয়াদপূর্তিতে মূল অঙ্কের সঙ্গে ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে ১২ শতাংশ চক্রবৃদ্ধি হারে লভ্যাংশ প্রদান করা হয়।

২১. প্রশ্ন: আমি একজন কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক। বাংলাদেশ দূতাবাস, দোহা কি কি ডকুমেন্ট সত্যায়িত করে থাকে বিস্তারিত জানতে চাই।

  •  বাংলাদেশ দূতাবাস, দোহা সকল শিক্ষাগত সনদপত্র, মার্কশীট/ ট্রান্সক্রিপ্ট, প্রত্যয়নপত্র এবং জন্ম নিবন্ধন, নিকাহনামা, বিবাহ সনদ, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট (বাংলাদেশ পুলিশ থেকে ইস্যুকৃত) সত্যায়িত করে থাকে।
  • এসএসসি ও এইচএসসি সার্টিফিকেট ও মার্কশীটের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে এবং স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয কর্তৃক সার্টিফিকেট ও মার্কশীট ভেরিফাইডপূর্বক শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।
  •  জন্ম সনদ, নিকাহনামা ও বিবাহ সনদের ক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।
  •  বাংলাদেশ পুলিশ থেকে ইস্যুকৃত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক সত্যায়িত হতে হবে।
  • বাংলাদেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সত্যায়িত ডকুমেন্টস নিয়ে সরাসরি দূতাবাসে এসে ভেরিফাইড করার জন্য  দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার কাছে জমা দিতে হবে।
  • আপনার ডকুমেন্ট ভেরিফাইড হওয়ার পর দূতাবাসের ১৭ নং কাউন্টারে নির্ধারিত ফি জমা দিলে দূতাবাস আপনার ডকুমেন্ট সত্যায়িত করবে।

২২. প্রশ্ন: আমি কাতার হতে দেশে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে চাই। কিভাবে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিব?

  • কাতার হতে বাংলাদেশে কারো অনুকূলে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে হলে এটি পাওয়ার অব এটর্নি এ্যাক্ট ২০১৫ অনুযায়ী প্রস্তুতকৃত হতে হবে।
  • প্রস্তুতকৃত পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে উল্লেখিত দাতা এবং গ্রহীতার ছবিসহ আবেদনকারিকে দূতাবাসে স্ব-শরীরে উপস্থিত হতে হবে।
  •  সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সম্মুখে উক্ত পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে স্বাক্ষর করে দূতাবাসের ১৭ নং কক্ষে নির্ধারিত ফি জমা করতে হবে।

২৩. প্রশ্ন: আমার মূল পাসপোর্টটি হারিয়ে গেছে। কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। বর্তমানে আমি কিভাবে নতুন পাসপোর্ট পেতে পারি?

  • প্রথমে আপনার নিয়োগদাতা/ কোম্পানির নিকট পাসপোর্ট হারানোর বিষয়টি অবহিত করুন। তারপর  আপনার নিকটবর্তী থানা থেকে জিডি বা সাধারণ ডায়েরি করার জন্য নিয়োগদাতা স্বাক্ষরিত আরবি আবেদনটি সংশ্লিষ্ট থানাতে জমা করুন।
  • জিডির ফি ১০ রিয়াল পরিশোধ করে পাসপোর্ট হারানোর জিডিপত্র সংগ্রহ করুন এবং জিডির কপি, পাসপোর্ট ও কাতার আইডির কপিসহ দূতাবাসে পাসপোর্ট রি-ইস্যুর জন্য আবেদন করুন।
  • নিয়োগদাতা বা কোম্পানির সাথে যোগাযোগ না থাকলে আপনি দূতাবাসে উপস্থিত হয়ে মান্যবর রাষ্ট্রদূত বরাবর একটি আবেদন দাখিল করুন।
  • দূতাবাস আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে নিকটস্থ থানায় জিডির জন্য চিঠি ইস্যু করবে। উক্ত চিঠি নিয়ে থানায় গেলে তারা আপনার অনুকূলে জিডি (সাধারণ ডায়েরি) ইস্যু করবে। জিডির কপি নিয়ে দূতাবাসে এসে পাসপোর্ট রি-ইস্যুর জন্য আবেদন করতে পারবেন।

২৪. প্রশ্ন: আমার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ। পাসপোর্ট রি-ইস্যু (নবায়ন) করার জন্য কি করতে হবে?

  •   আপনার পাসপোর্ট ও কাতার আইডির ফটোকপিসহ মূল পাসপোর্ট নিয়ে দূতাবাসের মেইনগেট সংলগ্ন কক্ষ থেকে পাসপোর্ট নবায়নের ফরম সংগ্রহ করুন।
  •  ফরম পূর্ণ করে সরকার নির্ধারিত ১২২ রিয়াল (সাধারণ সকল পেশা) এবং ৪০৪ রিয়াল (ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী ও ম্যানেজার সমপর্যায়ের পেশা) ফি দূতাবাসের ১৭ নং কাউন্টারে জমা দিন।
  •  ফরম ও ফি জমাদানের কপিসহ ৯ নং রূমে পাসপোর্ট নবায়নের জন্য আবেদনটি জমা দিন এবং পাসপোর্ট ডেলিভারির রিসিট সংগ্রহ করুন।